ঢাকা , শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৫ , ১৭ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রক্ষক যখন ভক্ষক দুর্নীতি দমন কমিশনের উপপরিচালক মাহবুব দুর্নীতি করে শত কোটি টাকার মালিক

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট সময় : ২০২৫-১০-০২ ২২:৩৪:৫০
রক্ষক যখন ভক্ষক দুর্নীতি দমন কমিশনের উপপরিচালক মাহবুব দুর্নীতি করে শত কোটি টাকার মালিক রক্ষক যখন ভক্ষক দুর্নীতি দমন কমিশনের উপপরিচালক মাহবুব দুর্নীতি করে শত কোটি টাকার মালিক

নিজস্ব প্রতিবেদক 

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বাংলাদেশে ২০০৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ অনুসারে গঠিত হয়েছিল মূলত এটার উদ্দেশ্য ছিল প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে দুর্নীতি দমন, নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে কাজ করবে ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে কিন্তু দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের কিছু কিছু কর্মকর্তা কর্মচারী দুর্নীতি দমন করতে গিয়ে নিজেরাই জড়িয়ে যাচ্ছেন দুর্নীতির সঙ্গে অনেকেই বিভিন্ন মামলা বাণিজ্য ভয়ভীতি প্রদর্শন ও বিভিন্ন অপরদিকে বাঁচাতে মোটা অংকের ঘুষ গ্রহণ করে হয়ে গেছেন শত শত কোটি টাকার মালিক এবারে আলোচনা এসেছেন দুদকের পিওন থেকে হঠাৎ করে উপ-পরিচালক হওয়া মাহবুবের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে তিনি শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন ভুল দুর্নীতি ও বিভিন্ন অপরাধীকে দায় মুক্তি দিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন বিপুল পরিমাণ অর্থ। 



এসএসসি পাস করে পিয়ন হিসেবে দুদকে চাকরি শুরু করেন তবে কোন এক অদৃশ্য কারণে তিনি এখন দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি ঢাকা অফিসে ভাগিনা মাহবুব হিসেবে পরিচিত। ইতিমধ্যে তার বিপুল পরিমাণ তথ্য ফাঁস হয়েছে একাধিক গণমাধ্যমে কিন্তু কোন এক অদৃশ্য কারণে তিনি বহাল তবিয়তে আছেন অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন দুদকের মত একটি সংস্থা কিভাবে এই ধরনের একজন দুর্নীতিবাজ এখনো কর্মরত আছেন? 



বিভিন্ন অনুসন্ধান ও একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যে তার সম্পদ বিবরণীতে দেখা যায় রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় কে ব্লকের ১০ নম্বর রোডের ১০ তলা ভবনের দুটি ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন তার মা হোসনেয়ারা বেগমের নামে এবং ফ্ল্যাট দুটিতে ইন্টেরিয়র ও ডেকোরেশন বাবদ খরচ করেছেন কয়েক কোটি টাকা, অভিযোগ আছে মহাখালী সোনালী ব্যাংকের লকারে ৩০ থেকে ৪০ কোটি টাকার স্বর্ণ আছে, জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে রয়েছে কয়েক শত বিঘা জমি, স্ত্রীর নামে গুলশান, জোয়ারা সাহারা, ডেমরায় ক্রয় করেছেন একাধিক প্লট ফ্লাট, বিলাসিতার জন্য ঢাকার নন্দি পাড়ায় তিন বিঘা জমির উপরে তৈরি করেছেন একটি বাগান বাড়ি, যেখানে অবসর সময়ে বিভিন্ন নারীদের নিয়ে ফুর্তি করেন, আশুলিয়ার গনক বাড়ি এলাকায়ও ক্রয় করেছেন বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি, গ্রামের বাড়িতে রয়েছে মুরগির পেলটি ফার্ম মাছের ঘের আরো বিভিন্ন ব্যবসা এছাড়াও আরো বিভিন্ন সম্পদ ক্রয় করেছেন নিজের আত্মীয়-স্বজনের নামে বেনামে চলাচলের জন্য রয়েছে একাধিক গাড়ি তবে কোন গাড়ি তার নামে নয় অন্যের নামে রেজিস্ট্রেশন করে রেখেছেন। কত টাকা বেতন পান তিনি? কিভাবে হল এত সম্পদ? তার উত্তর খুঁজতে গিয়ে বিভিন্ন অনুসন্ধান ও প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়।



আইডিয়াল স্কুলের সাবেক অধ্যক্ষ শাহানা বেগম ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা আতিকের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছিলেন চার পাঁচ কোটি টাকা, তাদেরকে দায়মুক্তি দিতেই এই ঘুষ গ্রহণ করেন তিনি, এসেনশিয়াল ড্রাগের এমডি অধ্যাপক এহসানুল কবিরের কাছ থেকে ১০ কোটি টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ছিল, এছাড়াও এসেনশিয়াল ড্রাগের এমডির পিএস মনিরের সহযোগিতায় ৫০ জন লোকের নিয়োগ বাণিজ্য করে হাতিয়ে নিয়েছিলেন প্রায় পাঁচ থেকে ছয় কোটি টাকা, আরো অভিযোগ আছে জন সাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী তুষার মোহন সাধু খাঁর ফান্ড কালেক্টর মোঃ আনোয়ার শিকদারের বিরুদ্ধে ৯ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে তৎকালীন জামালপুরের জনস্বাস্থ্য বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ ঘুষ নিয়েছেন দায় মুক্তি দেওয়ার জন্য।



এছাড়াও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তারই এক নিকট আত্মীয় বলেন, আমার কাছ থেকে ২ কোটি টাকা চাঁদা নিয়েছেন মামলার ভয় দেখিয়ে অথচ আমি বৈধভাবে ব্যবসা করি, এছাড়াও বেশ কয়েকজন রাজনীতিবিদ ও সরকারি কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকেও মামলা বাণিজ্য ও দায়মুক্তি সহ বিভিন্নভাবে ভয় ভীতি ও প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে কোটি কটি টাকা হাতিয়ে  নিয়েছেন, আবার দুদকের বিভিন্ন মামলার তদন্তের নামে নিজের সিন্ডিকেটের লোক দিয়ে কাজ করান, রয়েছে তার একটি নিজস্ব সিন্ডিকেট যারা সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন কারণ মাহবুব সরাসরি কোন অর্থ গ্রহণ করেন না, এভাবেই প্রতিনিয়ত বাড়ছে তার সম্পদের তালিকা।


দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের প্রাতিষ্ঠানিক সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে এই ধরনের অসাধু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের জন্য যেখানে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান অপরাধ নির্মূলে কাজ করছে সেখানে মাহবুব আলমের মতো বিতর্কিত কর্মকর্তা এই প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে তবে কোন এক অদৃশ্য কারণে মাহবুব আলমের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না যদি এই ধরনের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না হয় তাহলে আগামীতে দুদকের আরো কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই ধরনের অনিয়র সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকবে, এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে রাষ্ট্র সমাজ এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পথে বাধা সৃষ্টি করবে। 


এ বিষয়ে জানতে উপ-পরিচালক মাহবুব আলমের ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। 

 
মাহবুব আলমের আরো ঘুষ দুর্নীতি অনিয়মের বিভিন্ন তথ্য ও সম্পদের বিবরণ নিয়ে একটি ভিডিও প্রতিবেদন আসছে দ্বিতীয় পর্বে।



 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin

কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ